![]() |
source: adobe stock |
স্বাভাবিক ভাবে প্রাকৃতিক জলে আর্সেনিক লবণ ও ফ্লোরাইড যৌগ থাকে । কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক কারণে জলে আর্সেনিক ও ক্লোরাইডের পরিমাণ স্বাভাবিকের বেশী হলে জল দূষিত হয়।
জলে আর্সেনিক লবণের পরিমাণ স্বাভাবিকের বেশী হলে জীব জগতের যে অবাঞ্চিত পরিবর্তন হয় তাকে আর্সেনিক দূষণ বলে।
WHO এর মতে পানীয় জলে উপস্থিত আর্সেনিকের নিরাপদ মাত্রা হল 0.05 mg / L এবং ফ্লোরাইডের নিরাপদ মাত্রা হল 0.8 mg / L । পানীয় জলে ফ্লোরাইডের পরিমাণ নিরাপদ মাত্রার বেশী হলে জীব জগতের অবাঞ্ছিত পরিবর্তনকে ফ্লোরাইড দূষণ বলে।
আর্সেনিক দ্বারা জল দূষণের কারণ
( 1 ) কৃষিকার্যে ও জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভের জল যথেচ্ছভাবে উত্তোলনের ফলে নীচের জলস্তর অস্বাভাবিক ভাবে নেমে যায় । তাই ভূগর্ভের জল ধীরে ধীরে আর্সেনিক যুক্ত শিলাস্তরের সংস্পর্শে চলে আসে । ফলে জল আর্সেনিক যুক্ত হয় ।
( 2 ) কৃষিক্ষেত্রে পােকামাকড় ও আগাছা ধ্বংসের জন্য আর্সেনিক ঘটিত কীটনাশক ও আগাছানাশক ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এবং
( 3 ) শিল্পাঞ্চলে রাসায়নিক কারখানা থেকে আর্সেনিক ঘটিত বর্জ্যপদার্থ যত্রতত্র ফেলে রাখায় বৃষ্টির জলের সঙ্গে ওইগুলি নদী ও জলাশয়ে মেশে । এই আর্সেনিক যুক্ত জল ধীরে ধীরে চুইয়ে ভূগর্ভের জলে মেশে । ফলে গভীর নলকূপ থেকে ক্রমাগত উত্তোলিত জলে আর্সেনিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
আর্সেনিক দূষণের পরিনতি
জলে আর্সেনিক সাধারণত আর্সেনাইট ও আর্সেনেট লবণ হিসাবে থাকে । এর মধ্যে আর্সেনাইট বেশী বিষাক্ত । দীর্ঘ দিন ধরে আর্সেনিক দূষ্ট জল পান করলে মানবদেহের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ে । এরফলে আর্সেনিকোসিস রােগ দেখা দেয় । এই রােগে আক্রান্তব্যক্তির মুখে ঘা হয় । চোখ লাল হয়ে যায় । শরীর ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে । আর্সেনিক দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি ব্ল্যাক ফুট রােগে আক্রান্ত হন । এরফলে হাতের তালু পায়ের তলায় কালাে দাগ হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয় । যার শেষ পরিনতি চামড়ার ক্যানসার এবং শেষে মৃত্যু হয়।
ফ্লোরাইড দূষণের কারণ
( 1 ) কীটনাশক তৈরিতে এবং প্লাস্টিক উৎপাদনে ক্লোরাইড ব্যবহৃত হয় । এইসব শিল্পালের বর্জ্য পদার্থ যেখানে সেখানে ফেলে রাখার ফলে বৃষ্টির জল দ্বারা বাহিত হয়ে নদী ও জলাশয়ে মেশে । ফলে ফ্লোরাইডযুক্ত জল ভূপৃষ্ঠের
ওপরের জল ও ভূগর্ভের জলকে দূষিত করে ।
( 2 ) এছাড়া ভূগর্ভের ফ্লোরাইড যৌগও জলে ফ্লোরাইডের উপস্থিতির প্রধান কারণ !
ফ্লোরাইড দূষণের পরিনতি
ফ্লোরাইড যুক্ত জল দীর্ঘদিন পান করলে ফল্লুওরসিস রােগের সৃষ্টি হয় । ফলে দাঁত ও হাড়ের Ca2 + আয়নের ক্ষতি হয় । শরীরের হাড় অকেজো হয়ে পড়ে । হাঁটু অনমনীয় হয় দেহকোশ এমনকি মস্তিষ্কের কোশগুলিও নষ্ট হয় ।
0 Comments